10 Step Routine, Korean Skincare Routine, Skincare

ত্বক চর্চায় 10 ধাপের কোরিয়ান বিউটি রুটিন জেনে নিন

winter skin care routine 1280x720 1

কোরিয়ান বিউটি ট্রেন্ডকে প্রভাবিত করেছে কে-পপ

                                                                                কোরিয়ান বিউটি ট্রেন্ডকে প্রভাবিত করেছে কে-পপ  ছবি: উইকিপিডিয়া

গত পাঁচ বছরে বিশ্বে মেকআপের চেয়ে স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের চাহিদা অনেক বেড়েছে। এ জন্য অবশ্য দায়ী কোরিয়ান বিউটি বা কে-বিউটি। কারণ, সৌন্দর্যচর্চায় কোরিয়ানদের মূলমন্ত্র ‘স্কিন ফার্স্ট, সেকেন্ড মেকআপ’। এটিই তাদের স্বাস্থ্যকর, সুন্দর, নিদাগ, টানটান ও উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য। এখন পুরো বিশ্বই কে-পপের মতোই মজেছে কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্ট ও তাঁদের স্কিন কেয়ার রুটিনে। সুন্দর, দাগহীন, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক পেতে কোরিয়ান ‘টেন স্টেপ’ স্কিন কেয়ার এখন সবার ‘অবসেশন’-এ পরিণত হয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কী কী আছে এই দশ ধাপে—
  • মেকআপ রিমুভার ও অয়েল ক্লিনজার

প্রথম ধাপ মেকআপ রিমুভার ও অয়েল ক্লিনজার। এখানে মেকআপ রিমুভার হিসেবেই অয়েল ক্লিনজার ব্যবহার করা হয়। আবার কখনো মাইসিলার ওয়াটার দিয়ে মেকআপ রিমুভ করে পরে ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধোয়া যায়। এই ধাপে মুখের মেকআপ, আটকে থাকা বাইরের ধুলা–ময়লা, অতিরিক্ত সিবাম, এসপিএফ—সবকিছু পরিষ্কার করা হয়। ক্লিনজারের উপাদান হিসেবে বেশি ব্যবহার করা হয় জোজোবা অয়েল, ম্যাকাডেমিয়া অয়েল, গ্রেপসিড অয়েল, অলিভ অয়েল, কোকোনাট অয়েলের মতো প্রাকৃতিক তেল।
  • ওয়াটার বেজড ক্লিনজার

দ্বিতীয় ধাপে ওয়াটার বেজড ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধোয়া হয়। যেসব ময়লা অয়েল ক্লিনজার দিয়ে যায় না, সেগুলো পরিষ্কার করতে ওয়াটার বেজড ক্লিনজার ব্যবহার করা হয়। এটি ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে। এর উপাদান হিসেবে সবচেয়ে ভালো গ্রিন টি, চাল ও মুক্তার নির্যাসসমৃদ্ধ ক্লিনজার।
  • এক্সফোলিয়েটর

এক্সফোলিয়েশনের মাধ্যমে ত্বকের মৃতকোষ অপসারণ ও রোমকূপ পরিষ্কার করা হয়। নিয়মিত এক্সফোলিয়েশন ত্বকে অন্যান্য স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট শোষণে সহায়তা করে। তবে এটি সপ্তাহে ১-২ দিনের বেশি করা যাবে না।
  • টোনার

কে-বিউটিতে টোনার প্রাকৃতিক উপাদানে সমৃদ্ধ এমন একটি স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট, যা ত্বকের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে। সাধারণত ডাবল ক্লিনজিং ও এক্সফোলিয়েশনের ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। টোনার ব্যবহার করলে ত্বকের আর্দ্রতা ফিরে আসে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। ত্বকের ধরন বুঝে এটি ব্যবহার করা উচিত।
  • এসেন্স

এসেন্সের সঙ্গে আমাদের পরিচয়টা খুব বেশি দিনের নয়। এর নাম শোনা হলেও অনেকে জানেন না এটি কী বা এর কাজ কী। এসেন্স খুব হালকা ধাঁচের একটি প্রোডাক্ট, যেটি টোনার ও সিরামের সংমিশ্রণ। এর প্রধান কাজ ত্বককে আর্দ্র করে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে তোলা। বাজারে যেসব এসেন্স পাওয়া যায়, তার বেশির ভাগই প্ল্যান্ট বেজড। টোনারের মতো এটিও ত্বকের ধরন অনুযায়ী বেছে নিতে হবে।
  • ট্রিটমেন্ট

এই ধাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অসুস্থ হলে যেমন ওষুধ সেবন করি, তেমনি এই ধাপে ত্বকের সমস্যা সমাধানের জন্য সিরাম বা অ্যাম্পুল ব্যবহার করা হয়। ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা, তৈলাক্ততা, ব্রণ, র‍্যাশ, পিগমেন্টেশন, বলিরেখা—সবকিছুর জন্যই সিরাম বা অ্যাম্পুল পাওয়া যায়। সিরাম খুব হালকা ধরনের তরল। আর অ্যাম্পুল সিরামের চেয়ে একটু ভারী হয় এবং এতে সিরামের চেয়ে বেশি কার্যকরী উপাদান থাকে।
  • শিট মাস্ক

শিট মাস্ক ছাড়া কোরিয়ান স্কিন কেয়ার চিন্তাই করা যায় না। অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও এর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি। এর অন্যতম কারণ সহজলভ্যতা। শিট মাস্ক ব্যবহার করাও খুব সহজ। এটি লাগানোর পর ধোয়ার প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি এই মাস্ক ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সব রকমের ত্বকের জন্য মাস্ক পাওয়া যায়। রাতের বেলা সপ্তাহে দুবার ১৫ থেকে ২০ মিনিট ব্যবহার করাই যথেষ্ট। তবে প্রতিদিন ব্যবহার করলেও কোনো ক্ষতি নেই।
  • আই ক্রিম

চোখের ত্বকের জন্য জরুরি বাড়তি যত্নের। কারণ, আমাদের ত্বকের সবচেয়ে নাজুক অংশ হচ্ছে এটি। এমনকি যাদের তৈলাক্ত ত্বক, তাদেরও চোখের নিচের অংশ শুষ্ক থাকে। বয়সের ছাপ সবার প্রথমে চোখের নিচে পড়ে। চোখের নিচের বলিরেখা, কালো দাগ, ফোলাভাব প্রতিরোধ করতে ২৫ বছর বয়সের পর থেকে নারী–পুরুষ সবার একটি ভালোমানের ভিটামিন ই–যুক্ত আই ক্রিম ব্যবহার করা উচিত।
  • ময়েশ্চারাইজার

ত্বকের পুষ্টি আর নিবিড় পরিচর্যার জন্য ভালো মানের প্রাকৃতিক উপাদানযুক্ত ময়েশ্চারাইজার লাগাতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। কয়েক ধরনের কোরিয়ান ময়েশ্চারাইজার আছে। যেমন ক্রিম, জেল, অয়েল ইত্যাদি। ত্বকের ধরন ও চাহিদার কথা চিন্তা করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
  • সানস্ক্রিন

সর্বশেষ ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে বাঁচাতে এসপিএফ–যুক্ত সানস্ক্রিন না মেখে বাইরে যাওয়া যাবে না। টাইটেনিয়াম অক্সাইড ও জিঙ্ক অক্সাইডযুক্ত সানস্ক্রিন ত্বকের জন্য ভালো। বাইরে বের না হলেও দিনের বেলা সব সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।
এই হলো কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিন। সকাল ও রাতে দুবার এই ধাপগুলোর ক্রমানুসারে ত্বকের পরিচর্যা করলেই পাওয়া যাবে কাঙ্ক্ষিত তারুণ্যময় সুস্থ ত্বক।

*Collected from Prothom-Alo

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *